Submitted by Saheeba Sabab on Fri, 06/18/2021 - 11:47

দেশব্যাপী হাজার হাজার পরিবার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। মহামারীর এই দুর্যোগকালীন সময়ে তাদের সমস্যাগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করছে।সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের দারিদ্র্য সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার গত অর্থবছরের তুলনায় ৭.০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা কোভিড পূর্ববর্তী বছরের বিপরীত চিত্র। কোভিড সংক্রমণের কারণে দরিদ্রতা বৃদ্ধির হার তীব্রতর হচ্ছে এবং এ কারণেই দুস্থ, বেকার, দুর্বল, গৃহহীন ও অসহায় মানুষের জন্য সিএসআর (কর্পোরেট সোশাল রেসপন্সিবিলিটি)তহবিল ব্যয় করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে বাংলাদেশে সিএসআর আবেদনের সংখ্যা খুবই কম। সিএসআর অনুশীলনের ধীর অগ্রগতির বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যে রয়েছে

- সুশাসনের অভাব,
- শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন বা ভোক্তা অধিকার গোষ্ঠীর অভাব
- সিএসআরকে রফতানির এবং স্থানীয় বাজারে পিআর বিনিয়োগের পূর্ব শর্ত হিসাবে চিহ্নিত করতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা।

তবে কিছু সংস্থা সিএসআর উদ্যোগে জড়িত হয়ে পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, তাদের সিএসআর উদ্যোগের অংশ হিসাবে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুরক্ষা-সরঞ্জাম এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে। এই স্বাস্থ্যকর্মীগণ মহামারীর ঝুঁকি নিয়ে তাদের পেশাদারি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড COVID-19 আক্রান্তদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেছে; মৃত ব্যক্তিদের জন্য ধর্মীয় জানাজার ব্যবস্থা করেছে। দরিদ্র পরিবারগুলোকে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সরবরাহ করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। চলতি বছরের রমজানে এনার্জিপ্যাক ইলেক্ট্রনিক্স মিরপুরের বস্তি এলকায় স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জন্য সেহরির সময় খাবারের ব্যবস্থা করেছে। কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে তাঁরা বিদ্যানন্দ সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে এই কর্মসূচি পালন করেছে। রমজানের শেষ সপ্তাহে, বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবক দল এবং এনার্জিপ্যাকের কর্মীগণ মধ্যরাতের পরে খাবার বিতরণ শুরু করেন এবং সঠিক ব্যবপস্থাপনায় সময়মত সেহরির কর্মসূচি সমাপ্ত করেন। স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর ক্লান্ত মুখের হাসি জানান দিচ্ছিল এই খাবার পাবার আনন্দ, জানান দিচ্ছিল কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব কর্মসূচির স্বার্থকতা।

মহামারীর কঠিন পরিস্থিতি হয়ত শীঘ্রই দূর হবে না এবং হয়ত সিএসআর-এর উদ্যোগগুলি অনেক বড় কিছু নয়। তবে এই ছোট ছোট উদ্যোগগুলো চলমান থাকলে, মানুষের প্রয়োজনে মানুষ এগিয়ে আসলে, ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে। সিএসআর কেন্দ্রিক প্রতিবেদন বানানো বাধ্যতামূলক করা হলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। বিশ্বব্যাপী সিএসআর এর প্রতিবেদনের যে মান, তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বছর জুড়ে সামাজিক ক্রিয়াকলাপগুলির জন্য পৃথক প্রতিবেদন তৈরি করা যেতে পারে, যা কেবল সাম্প্রতিক ঘটনার ব্যাখ্যা করবে না, পূর্ববর্তী কর্মসূচির বর্তমান প্রভাব নিয়েও আলোচনা করবে। অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আমাদের স্থানীয় এলাকা থেকে কার্যক্রম শুরু করতে পারি  এবং পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি অন্যান্য জায়গায় বিস্তৃত করতে পারি। এনার্জিপ্যাকের সিএসআর কর্মসূচিটি কেবলমাত্র একটি সূচনা। আশা করি আমাদের আসন্ন সিএসআর কর্মসূচিগুলো সমাজে একদিন বড় পরিসরে পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

Please click here to read this blog in English