
প্রতি বছর নাগরিক জীবনের ৫০,০০,০০০ কর্মঘণ্টা শুধুমাত্র যানজটের কারণে নষ্ট হয়, যার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৭,০০০ কোটি টাকা। যানজট কেবল ভ্রমণ খরচ এবং জাতীয় আয়কেই প্রভাবিত করে না, পরিবেশ দূষণকেও করে তরান্বিত। নাগরিক জীবনকে যখন রোজকার যানজট সমস্যা ক্রমশ গ্রাস করছে, তখন বাংলাদেশ সরকারের শক্তি-সাশ্রয়ী মেট্রো রেল ব্যবস্থা তাঁদের মধ্যে সঞ্চার করেছে আশার আলো। মেট্রো রেল- একটি উন্নত, দ্রুত, আরামদায়ক এবং পরিবেশ-বান্ধব গণ পরিবহন ব্যবস্থা হতে পারে রাজধানীর দীর্ঘকালীন যানজট সমস্যার এক উত্তম সমাধান।
প্রথম মেট্রো-রেল ব্যবস্থার প্রচলন হয় লন্ডনে। ভূগর্ভস্থ রেলপথটি মূলত ১৮৬৩ সালে চালু হয়েছিল এবং ১৮৯০ সালে এটি মেট্রো রেল ব্যবস্থায় পরিণত হয়। একইভাবে, শিকাগো, বুদাপেস্ট, প্যারিস, গ্লাসগো, বার্লিন, নিউ ইয়র্ক, গ্রীস এবং ম্যাসাচুসেটস বিশ্বের প্রাচীনতম মেট্রো রেলপথগুলোর গর্বিত ধারক। বিশ্বের বৃহত্তম মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক এবং দ্রুততম মেট্রো রেলপথ হল চীনের সাংহাই মেট্রো। তাদের ম্যাগনেটিক লেভিটেশন (“ম্যাগলেভ”) প্রোটোটাইপ ট্রেন অদূর ভবিষ্যতেও গতির মানদন্ডে তাদেরকে রাখবে শীর্ষে।
বাংলাদেশ তার প্রথম মেট্রো রেল ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে এই দলে প্রবেশ করছে। এনার্জিপ্যাক ইলেকট্রনিক্স সবসময় এই ধরনের অবকাঠামোগত উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করে এবং রাজধানীর অবকাঠামো উন্নত হলে দেশে আরও নিত্যনতুন উদ্ভাবনের দেখা মিলবে । ঢাকার প্রথম মেট্রো রেল হলো একটি মেগা প্রকল্প যা শুরু হয় ২০১২ সালে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হবার জন্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে ৷ উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো , বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে গুলশান হলি আর্টিসানে জঙ্গী হামলায় নিহত জাপানিদের নামে মেট্রো রেল স্টেশনগুলির নামকরণ করার পরিকল্পনা করছে৷ ।
মেট্রো রেল বাংলাদেশের চলমান প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ধারার বহিঃপ্রকাশ । এর মূল মন্ত্র হলো “চলাফেরা করবে জনগণ, বাঁচবে সময় ও জ্বালানি”। জ্বালানী বা শক্তি সাশ্রয়ী পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটি সম্মুখসারীর কোম্পানি হিসেবে এনার্জিপ্যাক বিভিন্ন শক্তি-সাশ্রয়ী সমাধান দিতে পারে। এনার্জিপ্যাক ইতিমধ্যে ITD-Sinohydro-এর সাথে অংশীদারিত্বে লিপ্ত হয়ে মেট্রো রেল প্রকল্পে ABB, আইসোলেটর, ক্যাপাসিটর প্যানেল এবং অন্যান্য সাবস্টেশন সরঞ্জাম ও সুইচগিয়ার প্যানেল সরবরাহ করছে। তাছাড়া ঢাকার এই ঐতিহাসিক মেট্রো রেল প্রকল্পে তারা ইজি সুইচ সকেট সরবরাহ করছে। প্রয়োজনীয় সকল প্যানেল এবং সকেট সম্পূর্ণরূপে দেশে এবং দেশীয় শ্রমে উৎপাদন করার ক্ষমতা রাখে বলে এনার্জিপ্যাক গর্বিত।
মেট্রো রেলের মতো মেগাপ্রকল্প শুধু যানজটই কমাবে না, কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়াবে। তাছাড়া এই দ্রুতগামী পরিবহণ ব্যবস্থা দেশের অভ্যন্তরে ঘটাবে পরিবহন বিপ্লব। কিন্তু একটি দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থার সাথে জড়িত থাকে একটি জটিল প্রযুক্তিগত অবকাঠামো যার জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী ইলেক্ট্রিকাল এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্য। এবংএই প্রয়োজনীয়তাই এনার্জিপ্যাক ইলেক্ট্রনিক্সকে সুযোগ করে দিয়েছে দেশের এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনে নিজেদের পণ্য ও সেবা নিয়ে সামিল হবার।
সম্পাদনায়ঃ
রাফীআ হাসান
ভাবনা সেন
References